অ্যান্ড্রয়েড ফোন রুট করার সুবিধা এবং অসুবিধা

 

আজকে আমরা মোবাইল ডিভাইস রুট নিয়ে কথা বলবো। কেন রুট করে? রুট করে কি সুবিধা পাওয়া যায়? এবং এর অসুবিধা গুলো কি কি?

 


 প্রথমে আসুন দেখিনি রুট করার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা কি সুবিধা পেয়ে থাকে।

 

১. কথায় আছে রুট করলে নাকি ব্যবহারকারীকে অ্যান্ড্রয়েড সুপারপাওয়ার দিয়ে থাকে। মোবাইল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আপনি সুপার ইউজার খেতাব অর্জন করবেন।

 

তাছাড়া মোবাইলে কিছু এমন অ্যাপস থাকে  যা আনইন্সটল  করা যায় না রিপ্লেস ও  করা যায় না। কিন্তু রুট করলে অ্যান্ড্রয়েড আপনাকে এই সুবিধা দিয়ে থাকবে। আপনি যেমন ইচ্ছা সফটওয়্যার ইনস্টল-আনইন্সটল করবেন সেটা আপনার ডিভাইসের ডিফল্ট সফটওয়্যার হোক আর নাই হোক না কেন।


 

২. আপনি হয়তো দেখে থাকবেন গুগল প্লে স্টোরে অথবা বিভিন্ন রকমের অ্যাপ স্টোরে অনেকগুলো সফটওয়্যার থাকে যেগুলো অন্যান্য মোবাইল ব্যবহারকারীরা সহজেই ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু আপনার মোবাইলে তা সাপোর্ট করে না। আবার সাপোর্ট করলেও ঠিক যেমন দেখাচ্ছে তেমন সুন্দর পারফরম্যান্স দেয় না। আপনি হয়তো জেনে থাকবেন প্লে-স্টোরে এমন কিছু অ্যাপ আছে যেগুলো ইন্সটল করার সাথে সাথেই আপনার ডিভাইসের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করে থাকেন।

 


৩. এ ছাড়া এমন কিছু অ্যাপস আছে যেগুলো আপনি ব্যবহার করতে চান। কিন্তু তা ফলস্বরূপ ব্যবহার করতে পারেন না। যেমনঃ থ্রিডি ওয়ালপেপার। কিছু ব্র্যান্ডের স্যামসাং মোবাইল ছাড়া এগুলো ব্যবহার করা যায় না।  বিভিন্ন ভিডিও বারবার দেখে আপনি মুগ্ধ হন কিন্তু আপনার ডিভাইস সম্মতি দেয় না। এর হাত থেকে বাঁচতে রুট করা যায়। রুট করলে এই থ্রিডি ওয়ালপেপার গুলো দেখানো স্বরুফ ব্যবহার করা যাবে।

 


৪.  ওয়াইফাই ব্লুটুথ টেথারিং করতে রুট বাধ্যতামূলক। আপনি হয়তো জানেন না ব্লুটুথ দিয়ে উচ্চমানের ইন্টারনেট বা ডাটা  ট্রান্সপার করা যায়। আর টা টান্সফার সম্ভব শুধু মাত্র রুট ব্যবহার করে।

 


৫. আপনি স্যামসাং থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম মোবাইলে দেখে থাকবেন। তারা বিভিন্ন রকম ফোনটি ইউজ করে মোবাইল লেখাগুলো বিভিন্ন রকম স্টাইল করে থাকে। আপনার ডিভাইসটি যদি built-in অপশনটি সাপোর্ট না করে। তাহলে  রুট করার মাধ্যমে বিভিন্ন রকম ফ্রন্ট স্টাইল ইন্সটল করে নিজের মতো করে কাস্টোমাইজ করে ব্যবহার করতে পারেন।

 

এমন একাধিক সুবিধা রয়েছে যেগুলো শুধুমাত্র রুট করার মাধ্যমে সম্ভব। রুট করার মাধ্যমে ডিভাইসটিকে আপনার নিজের মতো করে চালানো যায়। তাই  রুটকারীকে এন্ডয়েড সুপার ইউজার বলে।

 

 


ওয়ারেন্টি হারানোঃ

 

রুট করার মাধ্যমে আপনার ডিভাইসের যদি ওয়ারেন্টি থেকে থাকে তাহলে তা নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে। কারণ অনেক কোম্পানি আছে যারা রুট করা কে সাপোর্ট করে না। কিছু ডিভাইস আছে যা আনরুট করা যায়। কিন্তু যদি আপনি কাস্টম রম বা অন্যান্য সুবিধা ইন্সটল করে থাকেন যা আনইন্সটল করতে পারেন না। তাহলে যখন আপনি আপনার মোবাইলটি সার্ভিসিং সেন্টারে দিবেন তখন তারা ধরে ফেলবে যে এটি রুট করা হয়েছে। কাস্টম রম বা অন্যান্য সুবিধা সেই কোম্পানির দিয়ে থাকে না বিধায় তাদের চোখে ধরা পড়বে।

 

 

রুট করার সুবিধাঃ

 

কাস্টম রাম রম ভার্শন

 

 

কাস্টম রম বলতে আপনার ডিভাইসে যদি 2 GB  র‌্যাম থাকে তাহলে আপনি আরও 1 GB বাড়িয়ে তা 3GB করে ফেলতে পারবেন।  অথবা যদি 4GB থাকে তাহলে তা 6GB  তে রুপান্তর করতে পারবেন।

 

রোমের পরিমাণও অর্ধেক বারিয়ে নিতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার রোম অর্থাথ ইন্টারনাল স্টোরেজ যদি 16gb হয় তাহলে আরও 8 জিবি বাড়িয়ে 24 GB তে রুপান্তর করতে পারেন। অর্ধেক বাড়ানোর সুবিধা রয়েছে তবে সবক্ষেত্রে এটি প্রচলন নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনার ডিভাইস  সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে ইনস্টল করে ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।

 

যদিও এখন বিভিন্ন রকম পদ্ধতি আছে যার মাধ্যমে ভার্সন পরিবর্তন করা যায়। কিন্তু যদি আপনার ডিভাইসের ক্ষেত্রে সেটি  সম্ভব না হয় তাহলে আপনি চাইলেই রুট করার মাধ্যমে আপনার ডিভাইসটি 8 Version হয়ে থাকে এবং 10 Version যদি অ্যাভেলেবল থাকে তাহলে 10 Version এ রূপান্তর করতে পারেন। অর্থাৎ আপনার মোবাইলের শুধু স্টোরেজ নয় পুরো মোবাইলের ডিজাইন পরিবর্তন হয়ে যাবে। এবং দেখতেও অবিশ্বাস্য সুন্দর লাগবে যারা আপনার মত একই মডেলের মোবাইল ইউজ করে তারা দেখেও বিশ্বাস করতে পারবেন না এবং  কোনোভাবে আপনার মত কাস্টমাইজ করে বা আপনার মত ডিজাইন ব্যবহার করতে পারবে না।

 

পারফরম্যান্স বাড়িয়ে নেওয়া

 

 

বিভিন্ন রকম সফটওয়্যার যা দ্বারা বেস্ট পারফরমেন্স পাওয়া যায়। অনেকগুলো সফটওয়্যার আছে যা আপনি আপনার মোবাইলে রাখতে চান না। আবার এমন অনেক গুলো সফটওয়্যার আছে যা আপনার ইন্টারনাল স্টোরেজ খরচ করে আপনি চাইলেই কোন একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করার মাধ্যমে সহজেই সেই ফাইলগুলো এবং সফটওয়্যার গুলো কে আনইন্সটল করে আপনি মোবাইলে পারফরম্যান্স বাড়িয়ে নিতে পারেন এবং তার গতি হবে দেখার মত।

 

কাস্টম ইউআই

 

 

আপনার মোবাইলের বিভিন্ন রকম ডিজাইন আছে যেমন লকস্ক্রীন থাকলে ডিজাইন আলাদা, লক খোলার পর হোমস্ক্রিনে আবারা অন্যরকম ডিজাইন হয়ে থাকে এবং সফটওয়্যার মেনুতে গেলে তার ডিজাইন আবার আলাদা হয়ে থাকে। সফটওয়্যার ব্যবহার করার মাধ্যমে কাস্টম রম ইন্সটল করে আপনি সহজেই এগুলোর পরিবর্তন করে ফেলতে পারেন। কারণ মানুষ মাত্রই নতুনত্ব জিনিস ভালোবাসে। আপনার মোবাইলের এসকল ডিজাইন রোজ রোজ দেখার পরে আপনি চাইবেন  নতুন একটি ডিজাইন বেঁচে নিতে  আর এটি সম্ভব রুট করার মাধ্যমে।

 



ওভারক্লকিং

 

 

এটা সিপিইউকে শক্তিশালী করে। আপনি তো জানেন একটি মোবাইলে প্রসেসের জন্য সব কাজেই  সিপিইউ  করে থাকে। যখন আমার মোবাইলটি ব্যাবহার না করি আমরা চাইলেই রুট করার মাধ্যমে সিপিইউ এর কাজ বন্ধ করে রাখতে পারি। এবং পরবর্তীতে যখন আমরা কাজ শুরু করব তখনই সিপিও তার  ‍পুরো গতিতে প্রসেস করার মাধ্যমে আমাদের কাজের ক্ষেত্রে আরও বেশি গতি নিয়ে আসবে।

 

 

ব্যাটারি সমস্যার সমাধান

 

যারা ব্যাটারি সমস্যা নিয়ে ভুগছেন তাদের জন্য রুট থেকে ভাল পদ্ধতি আর হতে পারে না। কারন রুট করার মাধ্যমে আপনার মোবাইলের সাথে সাথে আপনার ব্যাটারি ক্যালিব্রেশন বাড়িয়ে নিতে পারেন। রুটের মাধ্যমে অনেক প্রসেসিং আপনি আগে থেকে কম ব্যবহার করার কারনে আপনি যে ব্যাটারি ব্যবহার করেন না কেন তা এমনিতেই  কম ব্যবহারের কারণে বেশি সময় ধরে চলতে থাকে। এছাড়া রুট করার সময় যে ব্যাটারিটি আপনার মোবাইলে সচল থাকবে সেটা নতুন করে পুনরায় নতুনের মতো করে কাজ শুরু করে দিবে।

 

রুট করার অসুবিধা সমূহঃ

 

ওয়ারেন্টি হারানো

 

 আপনার ডিভাইসটি যদি নতুন হয়  তখন যদি আপনি রুট করেন তাহলে আপনার ডিভাইসটিকে তার কোম্পানি থেকে কোন সার্ভিস দেওয়া হবে না অর্থাৎ ওয়ারান্টি হারাবে। কোম্পানি তাদের ডিভাইসের ক্ষেত্রে রুটকে না করে। রুট করার ফলে কোম্পানির কোন হাত থাকে না বিদায় 100%  ওয়ারেন্টি হারিয়ে যায়।

 

ফোন ব্রিক করা

 

যারা সম্পর্কে জানেন না তাদেরকে বলে রাখি ব্রিক অর্থ ইট। রুট করার সময় যদি কোন ভুল করে ফেলেন কিছু এদিক সেদিক হয়ে যায় তাহলে আপনার মোবাইল কিন্তু কোন কাজে আসবে না অর্থাথ ইটের মতো হয়ে যাবে।  এটি সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। রুট করার সময় অবশ্যই সব নিয়মকানুন ভালোভাবে জেনে নিবেন। না হলে কোন কম্পিউটার কাছে গিয়ে অভিগ্য  কোন মানুষের ধারা রুট করে নিবেন। সে ক্ষেত্রে তাকে বলবেন সে যেন এই মোবাইলের দায়দায়িত্ব নেয় অর্থাৎ যদি আপনার মোবাইলের কোন সমস্যা হয় তাহলে এর দায়িত্ব তার হবে।



Post a Comment (0)
Previous Post Next Post